
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী শাহী জামে মসজিদে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২০/১২৫ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা (যার নং-১৭) হয়েছে।
শনিবার (১১ জুন) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
এঘটনায় রবিবার (১২ জুন) রাতে পুলিশ আদমজী বিহারি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে ৩২ জনকে আটক করে।
পুলিশের এই গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার (১৩ জুন) সকাল থেকে আদমজী – চাষারা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিহারি কলোনির বাসিন্দারা।
আটককৃতদের বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, শুক্রবার জুম্মমার নামাজের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় রবিবার রাতে প্রাথমিকভাবে আমরা ৩২ জনকে আটক করেছি। তাদেরকে আজকে আদালতে পাঠানো হবে।
এদিকে ঘটনাস্থলে সকাল ৯টায় এসে উপস্থিত হয় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ আমির খসরু। তিনি বিক্ষোভকারিদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্য থেকে অতর্কীত পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারিদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও কয়েকশ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে।
এরপরে প্রায় ঘন্টাব্যাপী পুলিশ ও বিহারিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সোয়া ১০ টার দিকে ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডল ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বিক্ষোভ কারিদের সাথে কথা বলেন। এবং তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারিরা বেলা সাড়ে ১০টায় সরে যায়। পরে পৌনে ১১ টায় বিহারিরা আবার আদমজী নতুন বাজারে এসে অবস্থান নেয়। এবং আবারো ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তিনি বিহারিদের বুঝিয়ে আবার ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে যায়। এর আগে আদমজী ইপিজেডের কয়েক কর্মকর্তার ওপর হামলা করে।
অপরদিকে ১৫জন বিহারি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। সর্বশেষ এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেলা সোয়া ১১ টায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান।
এর আগে শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুলহক হামলার শিকার হোন। এসময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মসজিদটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন এবং সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন আহত হোন।
মামলাসূত্রে জানা যায়, গতকাল আদমজী শাহী জামে মসজিদে জুম্মার নামাজে ভারতের ঘটনার বিষয়টি উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক একটি বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ভারতের বিষয়টি যাতে আমাদের দেশে কোন প্রভাব ফেলতে না পারে এবং কোনো বিশৃংখলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয়। এ বক্তব্যের জের ধরে কিছু উচ্ছৃংখল যুবক তার উপর হামলা করে।
মামলায় আরো বলা হয়, তিনি ৬ নং বিট ইনচার্জ হিসেবে ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন যাবত মাদক, কিশোর গ্যাং বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। মামলায় উল্লেখিত এবং অজ্ঞাতনামা তার উপর পূর্ব আক্রোশ বশতঃ এই ঘটনা ঘটায়।