সরকারের মাদকবিরোধী অভিযান, নানা পদক্ষেপ কিংবা জিরো টলারেন্স নীতি চলমান থাকা সত্ত্বেও মাদকের বিস্তার কমছে না। উল্টো মাদকের ভয়াল থাবায় দেশে ভয়ঙ্কর রকমের অপরাধ যেমন সংঘটিত হচ্ছে, তেমনি মানুষের নীতি-নৈতিকতা বোধ-বুদ্ধি এমনকি ন্যূনতম হিতাহিত জ্ঞানটুকু পর্যন্ত খুইয়ে অনেকেই পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে।
রাজশাহীর জনৈক ওসমান গনি নামের এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে জোর করে মাদক খাইয়ে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরিফের সাথে রাত কাটানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরে গভীর রাতে কৌশলে ওই দুই নরপিশাচের হাত থেকে পালিয়ে বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে কোনমতে ইজ্জত রক্ষা করেন সেই স্ত্রী। দীর্ঘ ১১ বছর সংসার করার পর ওই স্বামী তার স্ত্রীকে কিভাবে বন্ধুর সাথে রাত কাটানোর জন্য চাপ দিতে পারে। বস্তুত মাদকাসক্তদের দ্বারা অসম্ভব বলে আদৌ কি কিছু বাকি আছে, এর উত্তর এক কথায় না। আর সমস্ত অপরাধের মূলে যে এই মাদক, এটাও প্রমাণিত।
এখানে আরেকটি স্পর্শকাতর বিষয় হলো ওই স্বামী ওসমান গনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরিফ একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সহকারী। তাহলে টাকার গরমে বন্ধুর সুন্দরী বউকে মাদক খাইয়ে রাতে ফুর্তি করার চিন্তা ভাবনাটা নিশ্চয় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী, কিংবা ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী বা কিছু নেশাখোর অমানুষের মাথা থেকেই বের হয়, এটাও প্রমাণিত সত্য।
কতিপয় প্রভাবশালী কিংবা ক্ষমতাবানরা তো বটে, এমনকি আমাদের গৌরবাম্বিত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় অসৎ এবং লোভী সদস্যও এই ভয়ংকর মাদক কেনাবেচা ও পাচারে সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে বলে শোনা যায়।
আরেকটি বিষয় বলে শেষ করছি, গাইবান্ধায় লিটন নামের নারী পাচারকারী চক্রের এক ব্যক্তি একাধিক বিয়ে করে তার সেই স্ত্রীদেরকে ইরাকে বিক্রি করে দিত। অবশ্য র্যাবের জালে আটকা পড়েন তিনি। এছাড়াও চাকরি দেয়ার নাম করে অসংখ্য নারীকে বিদেশে বিক্রি করে দেয়ার মত জঘন্য ঘটনা, অসভ্যতা, নানান রকমের ভয়ংকর নোংরামির কতটা তলানিতে এই সমাজ, প্রশ্ন করুন আপনার বিবেকের কাঠগড়ায়।
লেখক: শাহজাহান সিরাজ