
সময়ের অপেক্ষা
-কাজী তবিবুর রহমান
মা বললো-চল খোকা ঘুরে আসি,
ঘুরে আসি ধানের আইল ধরে,
নরম কুয়াশায় নদীর পাড়ে।
নে না ছুটি আজ, চল না আসি ঘুরে,
দরজার ওপাশে দূরে, বহুদুরে।
আমি বলি, না মা আমার সময় নেই,
বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে যেতে হবে অফিসে,
মিটিং শেষে ফিরবো সেই রাতে ,
আমার সময় নেই মোটে।
শুনে হৃদয়ে কষ্টের কাশফুল নড়েচড়ে উঠে।
আমার খোকা মস্ত অফিসার,
নিজের গাড়িতে চড়ে.
আকাশ ছুঁয়েছে সে, যশ আর খ্যাতিতে।
তারপর একদিন,
অফিস শেষ হয়, শেষ হয় স্কুল,
সুদূর সাইবেরীয়ায় শীতের পাখিরা ফিরে যায়,
একে,
একে একে,,
পড়তে থাকে
অবহেলার রেনু নেতানো ফুলে।
মা অপেক্ষায় থাকে….
বারাশিয়ার পাড়ে কোন এক বাঁশরীয়ার বাঁশীর সুরে,
অপেক্ষায় থাকে ধৈর্যবান বয়সী বটের ছায়ায় মতো,
কে কখন ফেরে ঘরে।
খোকা এখন বয়সী তালগাছ,
ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে একা,
তেপান্তরের মাঠ ফাঁকা,
স্রস্টার কি অসীম লীলা …
কোন অনুযোগ নেই আমার – মা বলে,
বিশ্বাস কর খোকা
কোনই অনুযোগ নেই আমার!
তোর মঙ্গলকামনায় দু’ঠোঁট শুধুই কাঁপে,
এবার আয় খোকা তুই আর আমি ঘুরি এক সাথে।।