সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : ক্ষোভ ও সমালোচনার মধ্য দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় হল রুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুর রহিম পিপিএম।
এদিকে এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নানা মতভেদ, চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নেতৃত্বস্থানীয় শীর্ষ কোন ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। এরআগে প্রতিটি ওপেন হাউজডেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের অনুষ্ঠানে পূর্বে অবগত করাসহ আমন্ত্রন করা হতো।
কিন্তু বর্তমানে এই ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে এ প্রথাটি বন্ধ হয়ে গেছে বলে অনেকেই জানান। শুধুমাত্র থানা পুলিশের ইচ্ছেনুসারে গুটি কয়েক ব্যক্তিকে অবগত করা হয় এবং কিছু পদহীন রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রন করা হয়। ওই নেতাদের কর্মীরা কিশোরদের নিয়ে থানায় মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। ফলে ওপেন হাউজডেতে থানার এলাকার সার্বিক বিষয়ের মতামত উপেক্ষিতই থাকে।
এতে থানার এলাকার আইনশৃংখলার অবনতিসহ অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলছে। এসব প্রতিরোধে সার্বজনীন কোনে মতামত ও প্রভাব পড়ছেনা। সমাজে অপরাধ প্রতিরোধে এগিয়ে আসছেনা কেউ, সচেতন ও হচ্ছেনা এলাকাবাসী। অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই বলেন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এদিকে অনুষ্ঠানে এসে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির উপস্থিতি না পেয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুষ্ঠান বয়কট করে চলে যান। তারা বলেন, প্রতিমাসে থানা আয়োজিত ওপেন হাউজ ডে পালন করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১০ টি ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১০ জন কাউন্সিলর রয়েছে। অথচ আজকের এই ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে কোন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি নেই।
তারা মনে করেন কিশোর গ্যাং মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাস দমনে অবশ্যই পুলিশের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একসাথে কাজ করতে হবে। তাহলেই মাদক, কিশোর গ্যাং, ইভটিজিংমুক্ত সুন্দর একটি সামাজিক পরিবেশ গড়া তোলা সম্ভব হবে। আর যদি সমন্বয়বিহীন এভাবে চলতে থাকে তাহলে আইনশৃংখলা স্বাভাবিক রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
অনেকেই অভিযোগ তুলেন, আজকে এই লোক দেখানো ওপেন হাউজডে অনুষ্ঠানে জন্য থানা প্রশাসনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। ওসি নবাগত হলেও পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে দায়িত্বপূর্ণ ও জোরালো ভুমিকা রাখলে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতোনা।
অনেকেই আবার অভিযোগ করেন, গত দুই মাস আগে কমিউনিটি পুলিশের কমিটি গঠন হলেও থানা এলাকায় এর কোনো কর্মকান্ড নেই। কারণ কমিউিনিটি পুলিশিং কমিটিতে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই জানেননা তারা এ কমিটিতে রয়েছেন। কাগজে কমিটি বাস্তবে সমন্বয় নেই। কেউ কাউেকে চিনেনা।
নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফার কাছে প্রত্যাশা তাদের ওসি নিজে এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবেন। তাহলেই সিদ্ধিরগঞ্জে কোন কিশোর গ্যাং থাকবে না, কোন ইভটিজিং হবে না, কোন চাঁদাবাজি হবে না। অপরাধ কর্মকান্ড করে কেউ পার পাবেনা ।