
মোঃ কবির হোসেন: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন , বাঙালির বিশ্বস্তঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই আমাদের আসল ঠিকানা৷ আজ সময় এসেছে তার হাতকে শক্তিশালী করার। অপশক্তিকে প্রতিহত করতে আজ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের দেশ গভীর ষড়যন্ত্রের মুখে।
এ দেশ আবারও সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে আক্রান্ত, জঙ্গিবাদের যারা এদেশে সূচনা করেছে, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় আবারওহিংসার থাবা দৃশ্যমান। এখানে রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতির দায়িত্ব আছে। এ শত্রু আমাদের অভিন্ন শত্রু। ওরা স্বাধীনতারদুশমন , মুক্তিযুদ্ধের দুশমন। এদের হৃদয়ে বাংলাদেশ নেই।
তিনি আরো বলেন, পানাম সিটির মনোরম দৃশ্যপট সবাইকে মুগ্ধ করে। সোনারগাঁয়ের এসব বিষয়গুলোর দিকে কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো নজর দিলে জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমান ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন যে লক্ষ্যে এ লোকশিল্প ফাউন্ডেশন করেছিলেন তা স্বার্থক হবে। আজকের যে সমাবেশ তা সাংস্কৃতিক সমাবেশ। আপনারা সব জায়গায় রাজনীতি টেনে আনবেন না। এ সোনারগাঁ সংস্কৃতির আমানত। আমাদের এসব সম্পদকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, এ দেশে কারো সহিংস আন্দোলনের জন্য সাধারণ মানুষের মালামালের ক্ষতি হলে এর জন্য আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে সহিংসতা ও ভাংচুর করার। প্রতিনিয়ত তারা পুলিশের উপর হামলা করছে। তার সমুচিত জবাব আমাদের দিতেই হবে। তারা উন্মুক্ত রাজপথ পেয়ে যা খুশি তা করছে। কিছুদিন আগে কাঁচপুরে ছয়লেনের ভিত্তি প্রস্থর রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দিয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, চিত্রশিল্পী হাশম খান , নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এসএম রেজাউল করিম , নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ্-আল-কায়সার,নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মস্তফা রাসেল প্রমুখ । পরে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
মেলায় দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী , লোকজপ্রদর্শনী , পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের ছেলে মেয়েদের পরিবেশনায় বিলপ্ত প্রায় গ্রামীণখেলা , কর্মরতকারুশিল্পীর করুপন্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
ফাউন্ডেশন সূত্র জানান, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতদশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন। এ বছর সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ , হাতিঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জমদানিশিল্প , বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প -মাটির চায়েরকাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ- বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টরা কোটা পুতুল , খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প , নাগর দোলা, বায়স্কোপ ও মিঠাই মন্ডার পসরাথাকলে ষ্টলগুলোতে। মেলা উপলক্ষে ফাউন্ডেশন চত্বর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে শুরু হওয়া মেলা১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাসব্যাপী চলবে।