নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার আশুলিয়ার ৪নং ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার মোঃ জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া (রাজন) এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী রাজন বলেন, আমি বিপুল ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হওয়ায় এক শ্রেণির কুচক্রী মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে নানা রকম ষড়যন্ত্র করে আসছে।
বুধবার (১ জুন ২০২২ইং) রাত ৮টায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন নরসিংহপুর নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার মোঃ জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া (রাজন)। এ সংবাদ সম্মেলনে রাজন মেম্বার গণমাধ্যকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, গত ২৯/০৫/২০২২ ইং তারিখে দুপুর
১২টার দিকে মোঃ জাকির হোসেন ভুঁইয়া’র ছেলে হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া (২৬) ও তার লোকজন ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কিন্তু অন্যায়ভাবে আমার নির্বাচনীয় এলাকায় ৬নং ওয়ার্ডে পূর্ব নরসিংহপুর তারা এসে ইন্টারনেট লাইন সংযোগ দিয়ে ব্যবসার নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছেন। তারা লাঠি সোটা, ছোরা,ছ্যান ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রসন্ত্রে সজ্জিত হয়ে এসে রাকিব,জাহিদ, শামীম, শরিফ উদ্দিনের সাথে মারপিট করে।
এসময় তিনি সেখানে ছিলাম না বলে দাবি করেন ,রাজন বলেন আমাকে ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান সাহেদ নেতা খবর দিয়ে নিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে তাদের সাথে মিমাংসা করার কথা বলেন, এরপর সভাপতিসহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা বসে মিমাংসা করে দেওয়ার পর আশুলিয়া থানায় মামলা করা হয়। এই মামলায় আমাকে কেন জড়িত করা হলো? আমি একজন জনপ্রতিনিধি, আমাকে উক্ত মামলার ১নং বিবাদী করে আমার মানহানি করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার সাথে আমি জড়িত না, আমাকে এই ঘটনার সাথে জড়িত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সেই সাথে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে বলছি, আমার বিরুদ্ধে যে, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে, এই মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান, আমি ছাত্রলীগে ছিলাম, যুবলীগ করি, আওয়ামী লীগের সকল নেতা কর্মীদেরকে সম্মান করি।
সংবাদ সম্মেলনে মেম্বার রাজন তার বক্তব্যে বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬-৭ জন মেম্বার প্রার্থীর সাথে নির্বাচনে ভোটের লড়াই করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি, আমাকে এলাকাবাসী সবাই ভালোবাসেন, সম্মান দিয়েছেন, এই সম্মানহানি করার অধিকার কারো নেই। তিনি দাবি করেন, এলাকাবাসী ও সাংবাদিক, পুলিশসহ সবাই তদন্ত করে দেখেন যে, আমি কোনো চাঁদাবাজি করি কি না?। আমি দাবী করছি, আমি উক্ত এলাকাবাসীর ভোটে জনপ্রিয় মেম্বার হয়েছি, আমি কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ না,আমার দিক থেকে আমি সঠিক পথে চলছি, আমাকে নিয়ে কেউ কোনো ষড়যন্ত্র করলে আমিও আইনিভাবে এর জবাব দিবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। সেই সাথে আমার সম্মান রক্ষায় ঢাকা জেলার আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য ও চেয়ারম্যান সাহেবসহ সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাইছি, সবাই আমার সম্মানের দিকে তাকিয়ে হলেও আমাকে সহযোগিতা করুন, আমি সম্মানের সাথে বাঁচতে চাই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মোঃ আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া বলেন, ইন্টারনেট লাইন সংযোগ নিয়ে যে, কথা সমস্যা, এ ব্যাপারে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান সাহেদ ইচ্ছা করলে সমাধান করতে পারেন। মজিবর, জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া (রাজন) কে ডেকে নিয়ে মিমাংসা করে দেওয়ার পরও যদি থানায় মামলা করা হয়, তাও আবার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বারকে ১নং আসামি করে মামলা। তাহলে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানহানি করেছে এই মামলার বাদী। সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখা হোক প্রকৃত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ কারা। সেই সাথে রাজন ভুঁইয়া’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবী জানাচ্ছি।
উক্ত বিষয়ে আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মজিবর রহমান সাহেদ বলেন, ইন্টারনেট
লাইন সংযোগ দেয়া নিয়ে ইয়ারপুর ইনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া (রাজন) ও হাবিবুর রহমান ভুঁইয়াদের হামলা মামলার ঘটনা লজ্জাজনক। তিনি বলেন, সবাই নিজেদের মধ্যে মাত্র ১০-১২ হাজার টাকার ব্যবসা নিয়ে এতো দূর পর্যন্ত হামলা মামলা করা উচিত হয়নি। আমি রাজনকে বলেছি যে, তুমি নতুন মেম্বার নির্বাচিত হয়েছো, এটা অনেক সম্মানের বিষয়। নতুন করে কোনো হামলা মামলায় জড়িত হলে তোমার সম্মানহানি হবে। তুমি চেষ্টা করবে তোমার সম্মান ধরে রাখার জন্য। রাজন উক্ত ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলো কি না জানতে চাইলে মজিবর রহমান সাহেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার সময় রাজন উপস্থিত ছিলো না। তবে তার ভাইয়েরা ছিলো, দুইটা ছেলেকে মারধর করেছে তারা। এখন মামলা হয়েছে, এটা থানা পুলিশ দেখবে। আদালত থেকে রাজনসহ ৪ জনের জামিন হয়েছে বলে তিনি জানান।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ এমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, এক ব্যবসায়ী চাঁদাবাজির একটি মামলা করেছেন। আমরা আসামীদের আটকের চেষ্টা করছি। পুলিশ ও র্যাব জানায়, আশুলিয়া থানায় রাজন ভুঁইয়া ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এবং মামলা রয়েছে। তবে রাজন ভুঁইয়া মেম্বার হওয়ার কারণে বিষয়টি গুরত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে যে, সে এই ঘটনার সাথে জড়িত আছে কি না। আদালত থেকে রাজন ভুঁইয়া উক্ত মামলায় জামিনে আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, আদালত জামিন দিতেই পারে। তবে অপরাধী সে যেইহোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ।