
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নামের সাথে মিল থাকার সুযোগ নিয়ে, মৃত মুক্তিযোদ্ধার সনদ জালিয়াতি করে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে এক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেফতার করেছে দৌলতপুর থানা পুলিশ। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দানকারী ওই ব্যক্তির নাম আব্দুস সামাদ (৬৭)। সে দৌলতপুর উপজেলার গালা গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার গোলাডাঙ্গা গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুস ছামাদ। তিনি ২০০৭ সালে মারা যান। এই সুযোগে নামের সঙ্গে মিল থাকায়, দৌলতপুর উপজেলার গালা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে ময়নাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে ভুল তথ্য দিয়ে তার পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা বানান। আব্দুস সামাদ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার চেষ্টা করছে এবং সিঙ্গাইর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করছে, এ সংবাদ জানতে পেরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সেলিনা বেগম (৪৮) ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিঙ্গাইর থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। পরে মামলাটি আমলে নিয়ে মহামান্য আদালত আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দৌলতপুর থানা পুলিশ গত বুধবার রাতে সাটুরিয়া উপজেলা থেকে আব্দুস সামাদকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদকে আদালতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সেলিনা বেগম বলেন, আমার পিতার নাম আব্দুস ছামাদ। তিনি ১৯৭১ সালে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেন। ২০০৭ সালে তিনি মারা যান। আমার পিতার কাগজপত্র দেখে জানতে পারি তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পরে আমরা তার কাগজপত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অফিসে যোগাযোগ করি। সেখানে দেখা যায়, ভারত থেকে যে তালিকা এসেছে, সেই তালিকায় আমার পিতার নাম রয়েছে। পরে আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ করে কাগজপত্র ঠিক করি। ২০১৮ সাল থেকে আমার মা হালিমা বেগম সরকারি ভাবে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন।
প্রতারক আব্দুস সামাদ দীর্ঘদিন ধরে আমার পিতার ঠিকানা, মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ভুয়া ভাবে বানানোর চেষ্টা করছে। আমি খবর পেয়ে বাধ্য হয়ে ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাইর থানায় একটি মামলা দায়ের করি।