
ছবি: সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে জাল জালিয়াতি চক্রের একাধিক সক্রিয় সদস্যের বিরুদ্ধে দূর্ণীতিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অফিসের কতিপয় ব্যক্তি ও কতিপয় দলিল লিখক এ চক্রের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে অপকর্মের সহযোগীতা করার প্রমাণ মিলেছে। ফলে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে সিরাজদিখান সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস। চক্রের জাল জালিয়াতি ও অপকর্মের বিষয়টি অফিস ও দলিল লিখকদের কাছে ওপেন সিক্রেট হলেও চক্রটির ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। চক্রের মূল হোতা স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে গোপনে থেকে সহযোগী দিয়ে অপকর্মের রাম রাজত্ব কায়েম করেছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, জাল জালিয়াত চক্রের অন্যতম সদস্য সিরাজদিখান সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সরকারী বেতনভুক্ত এক নকলনবিশের নাম উঠে এসেছে। পদবী অনুসারে তার নকল লেখার কথা থাকলেও আতাত করে সাব রেজিষ্ট্রারের নাম ভাঙিয়ে অনেকটা দাপটের সাথে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ দলিল লিখকদের। খাজনার রশিদ (ডিসিআর) ও নামজারীর পর্চা জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কয়েক বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন ওই নকলনবিশ । মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সরকারী বেতনভুক্ত ওই কর্মচারীর জালিয়াতি ও দুর্ণীতির চুক্তির একাধিক কথপোকথন এরই মধ্যে প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
প্রভাবশালী অপরাধী চক্রটি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে জালিয়াতির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। মাঝে মধ্যে চক্রটির এসব দূর্ণীতি আর অপকর্ম প্রকাশ পেলেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে সেসব অপকর্ম চাপা পরে যায়।
সিরাজদিখান সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক দলিল লিখক অভিযোগ করে বলেন, এ চক্রটির কারণে আমাদের কাজ কর্ম কমে যাচ্ছে। যে সব কাজ বৈধ ভাবে আমাদের করা সম্ভব না সেসব কাজ চক্রটির সদস্যরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে করে দিচ্ছে। মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েও কাজ হওয়ার কারণে তাদের কাছেই যাচ্ছে। ফলে আমাদের কাছে কোন কাজ নিয়ে কেউ আসছে না। এমন যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। কয়েক বছর আগে জালিয়াতি একটি চক্রের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর কয়েকদিন অফিসটা ভালোভাবে চলেছিলো। অনেকদিন পর আবার সেই অপকর্ম শুরু হয়েছে। এতে রীতিমতো আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছি। আমরা চাই চক্রটির মূল হোতাসহ সদস্যদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দূর্ণীতিহীন কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করা হোক।