সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজীরোড এলাকায় ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে না দেওয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মায়ের ওপর হামলা করার অভিযোগ উঠেছে।
এমনকি জোরপূর্বক ওই ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে রাহাত ও তার দলবল। জানা যায়, রাহাত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও ওই ছাত্রীর পরিবার কোনো সুফল পায়নি। রাহাত ও তার দলবলেরা এখন ওই ছাত্রীর পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর বুধবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্রী সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় ওই এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা রাহাত (২২) ওই ছাত্রীকে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এক পর্যায়ে গত ১৫ জুন তার স্বজনদের নিয়ে মেয়েদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় রাহাত। কিন্তু ওই স্কুলছাত্রীর মা তার মেয়ে উপযুক্ত (বিয়ের বয়স) না হওয়ায় বিয়ে দিতে অপারাগতা প্রকাশ করেন। এ সময় জোরপূর্বক স্কুলছাত্রীকে বাড়ি থেকে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে রাহাত ও তার স্বজনরা।
এ সময় স্কুলছাত্রীর মা তাদের থেকে মেয়েকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকে মারধর করে রাহাত ও তার সঙ্গে আসা কিশোর গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্য ও তার স্বজনরা। এ সময় মা-মেয়ের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে কিশোরগ্যাং সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত ১৫ জুন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত আসলে এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রাহাত ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মোটর সাইকেল নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমনকি হত্যার হুমকিও দেয়া তারা।
স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ওই ছেলের কারণে তার মেয়ে গত ১৫ জুন থেকে স্কুলে যেতে পারছে না। বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলসহ দল নিয়ে তারা মহড়া দিচ্ছে।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন জানান, স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ওই ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় মেয়ের মা বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে ডিস্টার্ব না করতে বলে এসেছি। এখন যদি আবার ডিস্টার্ব করে তবে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে রাহাতের কাছে জানতে চাওয়া হলে, সে বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি তাকে (স্কুলছাত্রী) পছন্দ করি। বিয়ে করতে আমার মা (শাহনাজ) ও মামাকে (হাশেম) নিয়ে তাদের বাসায় গেলে তার মা (স্কুলছাত্রীর) আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। সে আরো জানায়, স্কুলছাত্রীর বয়স ১৩ নয়, বয়স ১৫।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।