বৃহস্পতিবার স্কুলে তদন্তে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আবু তালেব জানায়, আমি তদন্ত করে যা পাবো তাই তদন্ত প্রতিবেদনে জমা দেব। একটুকুও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দুর্নীতি করলে কাউকে ছেড়ে দেয়া হবে না।
আদমজী এম ডব্লিউ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ নায়েব আলী জানান, টাকা আত্মসাতের বিষয়টি বুঝতে পেরে আমরা প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে টাকা কি করেছেন জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজের দোষ স্বীকার করে ৩ দফায় (২৭/১০/২০২০ ইং, ২৯/১০/২০২০ ও ০৪/১১/২০২০ ইং) আত্মসাতের টাকা ফেরত দেন। তার এমন কান্ডে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর তাকে (প্রধান শিক্ষক) স্ব-পদে বহাল রাখার প্রস্তাব দেন কমিটির কাছে। এতে করে অত্র স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এম ডব্লিউ স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত স্কুলের মোট আয় ছিল ৮৭ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩২৭ টাকা। যার মধ্যে ৭৯ লক্ষ ৭০ হাজার ১৩৩ টাকা স্কুলের জনতা ব্যাংক লিমিটেডের আদমজী নগর শাখার চলতি হিসাব নং-২৫৫৫/৫ অ্যাকাউন্টে জমা দেন তিনি। মোট আয় এবং ব্যাংকে জমার পার্থক্যের ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। যা ইতিপূর্বে জেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলামের এক তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
গতকাল জেলা শিক্ষা অফিসের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আবু তালেব পূণঃরায় এ ঘটনায় তদন্ত করেন। তদন্ত কমিটিকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা জানিয়ে দেন, ঐ শিক্ষককে পূণঃবহাল করলে তারা তাদের সন্তানদের এ স্কুলে আর লেখা-পড়া করাবেন না। স্থানীয় কউন্সিলর তদন্ত কমিটিকে জানান, এ স্কুলে ঐ শিক্ষককে পুণঃবহাল করলে তারা নিরাপত্তার বিঘ্ন হতে পারে। কেননা তার দূর্নীতির কারণে এলাকাবাসী তার উপর ক্ষীপ্ত।
ইতিপূর্বেকার তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বিদ্যালয়ে অনিয়মিত আসতেন। সহকারী শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরন করতেন। সঠিকভাবে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম সম্পাদন তিনি করতেন না। বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শিক্ষারমান উন্নয়নে ব্যর্থ ও প্রশ্নপত্র প্রণয়নে অনিয়ম। নিজেই প্রশ্নপত্র তৈরি করতেন। এতে করে প্রশ্নপত্রে ভুল থাকতো। যার ফলশ্রুতিতে অভিভাবকরা বিরুপ মন্তব্য করতো। পরীক্ষার পারিশ্রমিক বাবদ ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে স্কুলের শিক্ষককরা। যা তিনি আত্মসাত করেন। তিনি ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে যোগদান করে এক মাসের মধ্যে তহবিল আত্মসাৎ ও তিন মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র সঠিক সময়ে প্রদান না করা। বোর্ড কর্তৃক জে, এস, সি ও এস. এস. সি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে বাধা সৃষ্টি করতেন। প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে সরকারি প্রনোদনা থেকে বঞ্চিত হয় একজন শিক্ষক। এ্যাসাইনমেন্ট, বার্ষিক কার্যক্রম, ভর্তি, অভিভাবকদের সভা করার জন্য আসতে বলে উপস্থিত না থাকাসহ মোট ৩৮ টি অভিযোগ উল্লেখ করা হয় তদন্ত রিপোর্টে।
স্কুলের অভিভাবকরা জানান, জাতির বিবেকের যদি এ অবস্থা হয় তাহলেতো আমরা ধ্বংসের কাছে চলে এসেছি। একজন প্রধান শিক্ষক কিভাবে এটা করতে পারে। আমরা আর তাকে এ স্কুলের কোন দায়িত্বে দেখতে চাই না। আমরা তাকে এ স্কুল থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। তাকে অপসারণ করা না হলে অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেনা বলে জানায়।
আরও পড়ুন
অক্টোবর ১৫, ২০২৪ ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ
অক্টোবর ১০, ২০২৪ ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ
অক্টোবর ৮, ২০২৪ ৭:২০ পূর্বাহ্ণ