
রাজু রায়হান, বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনায় জহিরুল ইসলাম (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (০৪ জুন) সকালে পৌর’শহরের কাঠপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জহিরুল ইসলাম আইন বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জহিরুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগরপুরে। তার বাবা মৃত আবদুল লতিফ সিকদার পুলিশে চাকরি করতেন। বহু বছর তিনি বরগুনায় কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবার চাকুরির সু’বাদে বরগুনা থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন জহিরুল। পরে ঢাকায় গিয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিউবিটি) তে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং পাশাপাশি পার্ট-টাইম চাকুরি শুরু করেন। তবে গত কয়েকমাস আগে পুনরায় বরগুনায় ফিরে ব্যবসা শুরু করেন জহিরুল। বরগুনার কাঠপট্টি এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় ভাড়া থাকতেন জহিরুল। শুক্রবার (৩ জুন) জহিরুল ওই এলাকায় নতুন একটি মুদি দোকান উদ্বোধন করেন ।
জহিরুলের বন্ধুরা জানান, জহিরুলের সঙ্গে বাড়ির মালিক আবদুর রব লিচু মাস্টারের ছেলে মিথাজের বন্ধুত্ব ছিলো। তারা একত্রে পড়াশুনা করতো। যে কারনে মিথাজের বাসার একটি রুম ভাড়া নিয়ে একা বসবাস করত জহিরুল।
জানা যায়, আব্দুর রব মাস্টারের বাড়ির লোকজন সাংবাদিকদের অবগত করেন, জহিরুলের সঙ্গে তার মামাতো বোনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তাদের ধারণা গতরাতে মামাতো বোনের সাথে ঝগড়া করে বিছানার চাদর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে জহিরুল।
পক্ষান্তরে জহিরুলের পা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লাগানো থাকায় তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারনা জহিরুলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। একই দাবি জহিরুলের বড় ভাই রফিকুল ইসলামেরও।
রফিকুল ইসলাম বলেন, জহিরুল বরগুনায় তার বন্ধুর বাসায় একা ভাড়া থাকতো। ব্যবসা করার জন্য চার লাখ টাকা নিয়ে বরগুনায় আসে। দোকানের জন্য অগ্রিম ২০ হাজার টাকা দিয়েছে এবং অল্প কিছু টাকার মালামাল কিনেছে। বাকি টাকার হিসেব পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন, প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে তা নিয়ে আত্মহত্যা করার মতো অবস্থা হতে পারে না। মরদেহ উদ্ধার করার পর ওর হাত ও পায়ের অবস্থা দেখে মনে হয় কোন চেয়ারে বসা অবস্থায় মারা গেছে। মাথায় ক্ষত, পা রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। বিষয়টির সঠিক ভাবে তদন্তের দাবী জানায় রফিকুল।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ জানান, নিহত জহিরুলের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তার গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।