
নিজস্ব প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জে দারুল উলূম মাদানীনগর মাদসার (কওমী) হেফজ বিভাগের এক ছাত্রকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনার ৪’দিন পর ছাত্রের পাছায় আঘাতের দাগ দেখে তার অভিভাবক পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের জানায়। গতকাল বুধবার বিকেলে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা মাদরাসায় গিয়ে নির্যাতনের সত্যতা পান।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রের নাম আব্দুল্লাহ তালহা (১১)। সে ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার কসবা থানার চকবাস্তা গ্রামের আব্দুল হালিম অপুর ছেলে।
নির্যাতিত ছাত্র জানায়, পড়া মুখস্ত না পাড়ায় গত রোববার ফজরের নামাজের পর শিক্ষক সাইফুল ইসলাম আমাকে আধাঘন্টা পর্যন্ত মারধর করে। পাকার উপর ফেলে পাছার মধ্যে আঘাত করে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে মা বাবাকে জানালে আরো মারবে বলে ভয়দেখা। আমাকে মাদরাসা থেকে বের হতে দেয়নি।
ছাত্রের পিতা আব্দুল হালিম অপু জানান, গত সোমবার আমার স্ত্রী ছেলেকে দেখতে গিয়ে মারধরের বিষয়টি জানতে পারে। ছেলের পাছায় আঘাতের দাগ দেখে আমার স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়ে ফোনে আমাকে জানায়। পরে আমি গত মঙ্গলবার মাদরাসায় গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি দেখবে বলে জানায়। তবে মাদরাসার প্রিন্সিপালের সাথে আমাকে দেখা করতে দেয়নি।
এদিকে আব্দুল হালিম গতকাল বুধবার বিকেলে ঘটনাটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়ে ছেলেকে নিয়ে মাদরাসায় যায়। এসময় বিভিন্ন এলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্টমিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন।
এবিষয়ে মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফয়জুল্লাহর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি মাদরাসায় উপস্থিত নেই বলে জানায় শিক্ষকরা। তবে তিনি আসতেছেন বলেও অন্তত ১’ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও তিনি আর আসেননি। পরে তার পক্ষে মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবুল ফাতাহ বলেন, বিভিন্ন ব্যস্থতার কারণে ঘটনাটি অবগত হতে পারিনি। তবে গতকাল বুধবার সকালে বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক মিটিং ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে মাদরাসা থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি কোন শিক্ষক যেন শিক্ষার্থীদের উপর এমন নির্যাতন না করে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, শিশুটির উপর অমানবিক নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছি। তার অভিভাবকরা যদি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।