
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন‘বিএনপি বিশ্বাস করে কথা বলার স্বাধীনতায়, লেখার স্বাধীনতায়, সভা ও মিছিল করার স্বাধীনতায়।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন যদি আওয়ামীলীগ সরকারের অধিনে হয় সে নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি তো অংশগ্রহন করবেনই না। সেই নির্বাচন হবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় কথা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বা অন্তবর্তীকালীন সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। তিনি শুক্রবার
১৪ অক্টোবর ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপরোক্ত কথা বলেন।তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস করি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সেই বিশ্বাস আমার দলেরও। আমার দল একই ভাবে চিন্তা করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক দিন আগেই ময়মনসিংহে সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। তবে হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই শহরের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। এর অর্থ হোলো তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। সন্ত্রাস তারাই সৃষ্টি করে। তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে এবং রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তবে এবার কোনো বাধাই আমাদের বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
চট্রগ্রামে সমাবেশে শ্লোগান নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যারা এদেশে ধমীর্য় কার্ড ব্যবহার করতে চায়, ধর্মকে নিয়ে সমস্যা তৈরী করতে চায় তারাই এই কথা গুলো বেশি ছড়ায়, বেশি বলে। আজকে গুম হত্যার জন্য র্যাবের উপরে স্যাংসন দেওয়া হয়েছে। র্যাব তো হোম মিনিস্টার বা প্রাইমিনিষ্টারের হুকুম ছাড়া কিছুই করতে পারেন না। তাহলে সেংসন দিতে হলে আ’লীগের বিরুদ্ধেই দেওয়া উচিত। এই দেশে যত মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার জন্য এককভাবে দায়ি অনির্বাচিত আওয়ামীলীগ সরকার। জনগন তাদেরকে সেনসন দিয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বলে এখানে মানবাধিকার নাই, এখানে গুলি করে হত্যা করা হয়। মিছিলে গুলি করে হত্যা করা হয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশে প্রকাশ্যে রাজনীতি করে, সংবিধানের বিধান মেনে রাজনীতি করে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পাল্টমেন্টে যাওয়ার জন্য নির্বাচন করে, এটা হচ্ছে লিবারেল ডেমোক্রেসির একটা পরামর্শ এবং যে বিশ্বাস করে যে, বলার স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সভা—সমাবেশ, মিছিল করার স্বাধীনতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে এখন সেই পরিবেশ নেই। বাংলাদেশে একটি একনায়েকতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কথাটা তো আগে আমরাই বলতাম, বা অন্যান্য দলগুলো বলতো। কিন্তু এখন তাদের যে প্রধান সহযোগি দল জাতীয় পার্টি, তার প্রধান কাদের সাহেবও কিন্তু স্পস্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে একনায়েকতন্ত্র চলছে। এটাই একটি বাস্তব কথা, এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে, বাংলাদেশে একটি একনায়েকতন্ত্রের দেশ হয়ে গেছে। তারা আর গণতান্ত্রিক দেশ নেই। এই পরিস্থিতিতে একটি ডেমোক্রেটিক লিবারেল পার্টি হিসেবে আমরা এর মধ্যে যতটা সম্ভব কাজ করার চেষ্টা করছি। আপনারা দেখেছেন আমরা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছি। প্রত্যেকটি আন্দোলনই হচ্ছে জনসংযুক্ত। আমরা আন্দোলন করছি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। জনগনের সমস্যা নিয়ে। আমরা দ্রব্যমূল্য উর্দ্ধগতি, জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি, সাংবাদিকদের ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট বাতিল করা, আমাদের অধিকারগুলোকে স্পাবলিস্ট করার জন্য আন্দোলন করেছি।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে সারা দেশে, ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত আমরা কর্মসূচী নিয়ে গেছি। সেই কর্মসূচীর দ্বিতীয় ভাগে আমরা এখন বিভাগীয় সমাবেশে কাজ করছি। ইতিমধ্যে শান্তিপুর্নভাবে চট্রগ্রামে সমাবেশ সফল করেছি। যদিও সমাবেশ থেকে আসার পথে আমাদের নেতা কমীর্দের আক্রমন করা হয়েছে, গাড়িঘোড়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে এমনকি গ্রেফতারও করা হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে ৪ জন কমীর্ শহীদ হয়েছে। সেটাকে কেন্দ্র করে, পরবর্তিকালে যশোরে আওয়ামী দুবৃত্তরা আমাদের কমীর্কে হত্যা করেছে সেটাকে কেন্দ্র করে অথবা তারা নিজেরাই গলযোগ সৃষ্টি করে অসংখ্য মামলা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই আমাদের নতুন করে মামলার আসামীর সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আমরা চিন্তা করছি গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের যে, অধিকার, মিছিল করার অধিকার, সভা করার অধিকার, কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে যাচ্ছি। কোন বাধাই আমরা মানব না। আগামীকালই ময়মনসিংহে সমাবেশ রয়েছে। তারা নিজেরাই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত করে। সেটা তারা করে যাচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা তারা করছে রাষ্ট্রিয় সহযোগিতা নিয়ে। রাষ্ট্রকে তারা সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিনত করেছে। আমাদের লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি বীর মু্ক্তিযোদ্ধা নুর করিম, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, মোঃ আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. আব্দুল হালিম,জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবু হোসেন তুহিন, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ সহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এবং জেলার ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।