
মোঃ জোবায়ের পারভেজ শোভন: ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে টোল আদায় শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে টোল আদায় শুরু হয়।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা-মাওয়া মহাসড়কের ভাঙ্গা একপ্রেসওয়ের বগাইল টোলপ্লাজা থেকে সরকার নির্ধারিত টোল আদায়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে। সকাল ১১টার দিকে টোল প্লাজার চারটি বুথ থেকে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের কর্মরত সদস্যরা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন রুটের যানবাহন (বিশেষ করে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যেসব যানবাহন ঢাকার পথে যাচ্ছে) ও ঢাকা থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, লড়ি, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল থেকে নির্ধারিত টোল আদায় শুরু করেন।
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়েতে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য অনুমোদিত সব ধরনের যানবাহনের জন্য টোল নির্ধারণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
৫৫ কিলোমিটারের টোল হার অনুযায়ী, ট্রেইলার ১ হাজার ৬৯০ টাকা, হেভি ট্রাক ১ হাজার ১০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫৫০ টাকা, বড় বাস ৪৯৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৪১৫ টাকা, মিনিবাস ২৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস ২২০ টাকা, ফোর হুইলচালিত যানবাহন ২২০ টাকা, সিডান কার ১৪০ টাকা, মোটরসাইকেলে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টোল আদায়ে ধোলাইপাড় থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত মোট ছয়টি বুথ থাকবে। মাওয়া প্রান্তে আবদুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী, শ্রীনগর পর্যন্ত তিনটি এবং পদ্মা সেতু পার হয়ে, কুলিয়াবাজার, মালিগ্রাম ও ভাঙ্গা পর্যন্ত তিনটি টোল বুথ থাকার কথা রয়েছে।
টোল প্লাজা এলাকার দুপাশের রাস্তায় বেশ যানজট দেখা দিলেও পদ্মার বুকে নবনির্মিত পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে কয়েক মিনিটে পরিবার পরিজন বা স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় পৌঁছে যাওয়ার সপ্ন সত্যি হওয়ার আনন্দে অনেক যাত্রী টোল প্লাজার সামান্য যানজটকে তেমনটি গুরুত্ব বলে মনে করছেন না। তবে যাত্রীদের সার্বিক ভ্রমণ নিরাপদ করতে ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা টহল দেওয়ার পাশাপাশি সকল বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখে ভাঙ্গা একপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় তাদের নজরদারী উপস্থিত যাত্রীদের কাছে বেশ পরিলক্ষিত হয়।
টোলপ্লাজার ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম জানান, এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজার যানবাহনের থেকে টোল আদায়ের জন্য ৭টি বুথের মধ্য প্রথম দিনে তারা ৪টি বুথ দিয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোলআদায় করতে কিছুটা সময় বিলম্বিত হলেও পর্যায়ক্রমে এসব সমস্যা আর থাকবে না বলে তিনি নিজের অভিমত প্রকাশ করেন।
হামদান পরিবহনের যাত্রী দেবাশীস রায় বলেন, পরিবার পরিজনকে নিয়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে প্রথম ঢাকায় যাচ্ছি। ভাড়া সহনীয়। বাসের চালক ও সুপারভাইজার সহ সকলে যাত্রীদের প্রতি বেশ আন্তরিকত। বঙ্গবন্ধুর কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার আছে বলেই দক্ষিণবঙ্গে এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার অফিসার ইন চার্জ হামিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুলিশ সদস্যরা এক্সপ্রেসওয়ের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আজ সকাল থেকে ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ও থানার পুলিশ সদস্যরা যাত্রীরা যাতে কোন কষ্ট, হয়রানী বা নিরাপত্তাহীনতায় না থাকে এজন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য যে গত ২৫ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করার সাত দিন পর শুক্রবার সকাল ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙ্গা একপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজায় টোল আদায়ের কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে যাত্রা শুরু হল টোল আদায়ের।